নিপীড়ক রাষ্ট্রের সংস্কার আলাপ শুরু করার আহ্বান `রাষ্ট্রচিন্তার'
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০১৮, ০৭:৫৪ PM , আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮, ০৮:২৪ PM
বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নিপীড়ক আখ্যা দিয়ে তা সংস্কারের আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামের একটি জার্নাল।
বৃহস্পতিবার সংগঠনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর. সি. মজুমদার মিলনায়তানে ‘রাষ্ট্রের নিপীড়ক চরিত্র: সংস্কার কি সম্ভব ?’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা থেকে এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রচিন্তার সম্পাদক রাখাল রাহার সঞ্চলনায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে বেলা সাড়ে ৩টায় আলোচনা সভা শুরু হয়।
উপস্থিতদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, এডভোকেট হাসনাত কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন, অধ্যপক ফাহমিদুল হক, ড. সামিনা লুৎফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির উদ্দিন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী হাওলাদার।
আলোচনা সভায় বক্তারা ক্ষমতার ভারসাম্য ও ক্ষমতাচর্চায় মানুষের অংশগ্রহণ, সংসদকে মানুষের কাছে দায়বদ্ধ, সবার ভোটের মূল্যায়নের জন্য মোট প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সীট, জনবিরোধী সকল আইন সংস্কার করে জনস্বার্থ রক্ষার আইন প্রণয়ন, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার উপযোগী আইন ও নিরাপত্তার অধিকার দানের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এডভোকেট হাসনাত কামাল তার বক্তব্যে বলেন, ‘যেসব মন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তি পেয়েছেন, আজ তারাই বড়াই করে বলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা আদালত অবমাননা করছেন। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি মিথ্যা কথা বলে আকমল স্যারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র প্রতিনিধি বা ছাত্রদের অস্বীকার করা হচ্ছে। রাষ্ট্রকে যদি আইনগতভাবে জনগণের কাছে জবাবদীহি করতে বাধ্য করা না যায়, তাহলে এ রাষ্ট্রকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘রাষ্ট্র কোন পর্যায়ে গেছে, তা আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চরিত্র বিশ্লেষণ করলেই বুঝা সহজ হবে। রাষ্ট্রের চেহারা কি রকম কুৎসিত হলে, আকমল স্যারের মত ভালো মানুষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। তিনি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা হিসেবে একটি সকলের অধিকার ও সোহার্দ সম্পন্ন ‘রাষ্ট্রঘর’ কল্পনা করতে আহ্বান জানান।’
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী হাওলাদার বলেন, ‘আমার সন্তান নুরুল হক নুর বাংলাদেশের নাগরিক। অথচ আজ বাংলাদেশের বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে সে চিকিৎসা পায়নি, কিন্তু কেন পায়নি তা আমরা বুঝিনা।’
আলোচনা সভার সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে দেশ পেয়েছে, আমরা যেরকম রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলাম তা বাস্তবায়ন হয়নি। নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের নিপীড়ক চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। তিনি এ সমস্যা থেকে উত্তরণে রাষ্ট্র, আইন ও সরকার ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের উপর গুরুত্বরোপ করেন।